দ্বিতীয় ধাপে রোহিঙ্গারা মঙ্গলবার দুপুরে ভাসানচরে পৌঁছেছে। সকালে চট্টগ্রাম থেকে নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরের উদ্দেশ্যে নৌবাহিনীর ৬ টি জাহাজে যাত্রা করে রোহিঙ্গাদের এই দলটি। রোহিঙ্গাদের স্বাগত জানাতে ভাসানচরে বিভিন্ন রঙ্গিন ব্যানার ও ফেস্টুন সাজানো হয়। এসময় ঘাটে অবস্থান করে রোহিঙ্গাদের রিসিভ করেন নৌ-বাহিনী ও জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
দ্বিতীয় ধাপে স্বেচ্ছায় ভাসানচরে এসেছে ৪২৮ পরিবারের ১ হাজার ৮০৪ জন রোহিঙ্গা। এরমধ্যে পুরুষ ৪৩৩, মহিলা ৫২৩ ও শিশু ৮৪৮ জনসহ মোট ১ হাজার ৮০৪ জন।
মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম থেকে নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে দুপুর ১ টায় পৌঁছেন তারা। এসময় ভাসানচরের স্বাস্থ্যকর্মীরা তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষ করে নির্ধারিত ওয়্যার হাউজে কিছু দিক-নির্দেশনা দেন নৌ-বাহিনীর সদস্যরা ।
রোহিঙ্গাদের রিসিভ করতে পূর্ব থেকে নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. নোমান হোসেন, হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেনসহ একটি টিম ভাসানচরে অবস্থান করছে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন জানান, রোহিঙ্গাদের বহনকারী ৬টি জাহাজের মধ্যে ২টি দুপুর ১টায় ও পরে পর্যায়ক্রমে সবগুলো জাহাজ এসে পৌঁছায় ভাসানচরে। এরমধ্যে ৫টি জাহাজে রোহিঙ্গারা ছিল আর একটি জাহাজে তাদের মালামাল ছিল।
সোমবার সকালে বিশেষ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ৩৯টি বাসে ৪২৮ পরিবারের মোট ১৮০৪ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে চট্টগ্রামে আনা হয়। এছাড়া রোহিঙ্গাদের মালামাল নিয়ে ১১টি কার্গো এবং ট্রাক গাড়ি বহরে যুক্ত ছিল। এর আগে রবিবার বিকেলে ও সোমবার সকালে উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্প থেকে স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে আগ্রহী রোহিঙ্গাদের উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে অস্থায়ী ট্রানজিট পয়েন্টে নিয়ে আসা হয়।
এদিকে গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম দফায় ১ হাজার ৬৪২ রোহিঙ্গা ভাসানচরে গেছে। এর আগে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে সমুদ্র উপকূলে আটক আরও তিন শতাধিক রোহিঙ্গাকে সেখানে নিয়ে রাখা হয়।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, রোহিঙ্গা স্থানন্তরের জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে সরকার। সেখানে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ভাসানচরের পুরো আবাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।
উল্লেখ্য, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা ও নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় সাড়ে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। আগে আশ্রয় নেয়াসহ বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন।